বর্ষ ১, সংখ্যা ৮, সেপ্টেম্বর ২০২১
সম্পাদক
শাহ্ জে. চৌধুরী
নির্বাহী সম্পাদক
মুবিন খান
প্রচ্ছদ
আনিসুজ্জামান মুহাম্মদ
অলঙ্করণ
গোলাম ফারুক স্বপন
আনিসুজ্জামান মুহাম্মদ
২৬০ পৃষ্ঠা
দাম
বাংলাদেশে ১৫০ টাকা
যুক্তরাষ্ট্রে ১৫.৪৯ ডলার
‘পথ চাওয়াতেই আনন্দ’
‘আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ/ খেলে যায় রৌদ্র ছায়া/ বর্ষা আসে বসন্ত’- পথে শীত-গ্রীষ্মের রৌদ্র ছায়ার খেলাধুলা পেরিয়ে অনুস্বরেরও বর্ষা এসেছে। ক্ষণে ক্ষণে আপন-মনে হেসে গেয়ে গেয়ে এসেছে বর্ষা। ‘ততখন রহি রহি ভেসে আসে সুগন্ধ’র সঙ্গে হেমন্ত পেরিয়ে এসেছে বসন্ত। এসেছে আবারো শীত। পৃথিবীর বার্ষিক গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনুস্বরও আপন কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে একটি বার্ষিক গতি অতিক্রম করল। ঠিক এক বছর আগে, গেল ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘অনুস্বর’ পথ চলতে শুরু করেছিল। এবং অবশেষে অনুস্বর তার পথ পরিক্রমার প্রথম বছরটি পূরণ করল।
বাংলা ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে হাঁটতে শুরু করেছিল অনুস্বর। শুরুর দিনে অনুস্বর নিজের পরিচয়টি জানাতে বলেছিল, বাংলা বর্ণমালার ‘অনুস্বর’ বর্ণটির মতোই আমাদের অবস্থান। আমাদের জায়গাটি নিয়মতান্ত্রিকতা ও শুদ্ধতা। উচ্চারণের নিয়ম না মেনে অনুস্বর বর্ণটি বলতে গেলে যেমন বলাটা হয়ে উঠবে না, তেমনি সে বলাটা শুদ্ধও হবে না। আর এই অশুদ্ধতার ঠিক বিপরীতেই আমাদের অবস্থান। আমরা বলেছিলাম, যা কিছু, সকল কিছুর শুদ্ধতায় থাকতে চাই। সত্যটা বলতে চাই। একটি বছর অতিক্রান্ত করবার পর আমরা জানাতে চাই, আমরা আমাদের সে অবস্থান থেকে সরে আসি নি কখনো।
অনুস্বর স্বতন্ত্র কোনো বর্ণ নয়। ‘অ’ বর্ণটি হলো উচ্চারণে বিরতি বর্ণ। ওর ব্যবহার অনুমোদিত। অনুমোদনের বাইরে যাওয়ার উপায় নেই তার। ‘অনুমোদন’ হলো ‘চর্চা’’। এই চর্চা মানুষের মধ্যে নির্মাণ করে সততা, সম্প্রীতি। নির্মাণ করে নৈতিকতা, সামাজিকতা ও মূল্যবোধ। সকল মানুষেই কোনো একটি দর্শন মেনে চলে। আর দর্শনের মূল জায়গাটি হলো আদর্শ। আদর্শটি হলো নীতি। নীতি থেকে বিচ্যুতি ঘটলে সে জীবন কখনো আদর্শ জীবন হতে পারে না। ক্ষমতার অপব্যবহার হলো নীতিগত অবস্থানের বিরুদ্ধাচারণ। আর অস্তিত্ব, জ্ঞান, মূল্যবোধ, মানসিকতা ও ভাষা সম্পর্কে সাধারণ এবং মৌলিক প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনাই হলো দর্শন। ফলে আমরা বিশ্বাস করি, সকলেই জীবনের কোনো না কোনো ক্ষেত্রে কোনো না কোনো সময়ে দার্শনিক বটে। এ কারণে কাউকেই উপেক্ষা করবার জো নেই। এবং ঠিক এ কারণেই আমরা কাউকেই উপেক্ষা করি না কখনো। করি নি এখনো। আমরা মনে করি সকলেই গুরুত্বপূর্ণ। সেকারণে সকলেই অনুস্বর পরিবারের সদস্য। অনুস্বর সকলের। সকলের অনুস্বর।
শুরু থেকে গেল এক বছরে অনুস্বর সকল মতাদর্শকেই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছে। নানা পথ ও মতের মানুষদের আপন কথাটি, ভাবনাটি তুলে ধরতে সচেষ্ট থেকেছে। এই কাজটি করতে গিয়ে অনেকে আঙুলও তুলেছে। আঙুল তোলা লোকেরা অনুস্বরকে আপনাপন ভাবনার ছাঁচে ফেলতে চেয়েছে। কিন্তু অনুস্বর থেমে যায় নি। কেননা অনুস্বর খুব করে আস্থা নিয়েই বিশ্বাস করে, সুস্থ ও সুন্দর একটি সমাজ ব্যবস্থার বিনির্মাণে পরমতসহিষ্ণু হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
পরমতসহিষ্ণুতা মানুষকে চিন্তা করতে শেখায়, তার বিবেচনাবোধ তৈরি করে এবং সেটি প্রয়োগের মাধ্যমে ভিন্নমতকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে তাকে যাচাই বাছাই করতে উদ্বুদ্ধ করে। সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও ধর্মের অনুসারী ব্যক্তির মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা প্রদর্শন সুস্থ সামাজিক ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান শর্ত। পরমতসহিষ্ণুতা গণতন্ত্রের অন্যতম নয়, প্রধানতম নিয়ামক। আমরা পরমতসহিষ্ণুতা সমৃদ্ধ একটি সমাজ ব্যবস্থা নির্মাণ ও প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা চাই, সকলেই তার নিজের নিজের জায়গা থেকে আপন কথাটি বলুন। আপনার যদি ওতে আপত্তি থাকে, ভিন্নমত মতামত থাকে- আপনিও আপনার মতামতটি বলুন। অনুস্বর এই দুইয়ের বলাবলির একটি ‘প্ল্যাটফর্ম’ হয়েই আত্মপ্রকাশ করেছে।
অনুস্বরের চলবার পথটি গেল একটি বছরে খুব করে মসৃণ ছিল না। ভাবনার অতীত অসহযোগিতা কিছু ছিল বটে, তবে সহযোগিতার পাল্লাটাই ছিল ওজনে বেশি। কিছু মানুষ শুরুর দিন থেকেই অনুস্বরের পথ চলায় খুব সাবলীল আর বলিষ্ঠতায় হাত ধরে সঙ্গে হেঁটেছেন। তাদের কাছে আমরা ভীষণভাবে ঋণী। তাঁদেরকে অনুস্বরের কৃতজ্ঞতা।
অনুস্বরের বর্তমান সংখ্যাটি ‘প্রথম বছর পূরণ সংখ্যা’ হিসেবে প্রকাশিত হলো। সঙ্গত কারণেই একে বিশেষ সংখ্যার আদল দেয়া হয়েছে। আকৃতি ফুলে ফেঁপে হয়েছে প্রায় দশগুণ। ফলে এবারে নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নির্বাচনের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে সাহিত্য পত্রিকা না হয়েও সাহিত্যকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সংখ্যাটি পাঠকের কেমন লাগল সেটি আমরা জানতে চাই। পাঠকের বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা-সমালোচনা অনুস্বর নিশ্চয়ই প্রকাশ করবে।
‘অনুস্বর’-এর গেল এক বছরের সফল পথ চলা সম্ভব হয়েছে সকল লেখক, পাঠক, পৃষ্ঠপোষক, বিজ্ঞাপনদাতা, হকার ও শুভানুধ্যায়ীর অংশগ্রহণের কারণেই। আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। অনুস্বরের সঙ্গেই থাকুন অনুস্বর পড়ুন, অনুস্বরে লিখুন, অনুস্বরে বিজ্ঞাপন দিন।
এবারের সংখ্যায় যারা লিখেছেন:
১. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
২. সেলিনা হোসেন
৩. মাহমুদ জামাল কাদেরী
৪. জাহাঙ্গীর কবির
৫. আইয়ুব হোসেন
৬. আহসান কবির
৭. আজিজুল পারভেজ
৮. লুৎফুল হোসেন
৯. আফসার বিপুল
১০. জাহান আরা
১১. আকম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী
১২. অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন
১৩. ড. মো. মোরশেদুল আলম
১৪. জামিউর রহমান লেমন
১৫. ড. এস এম জাহাঙ্গীর আলম
১৬. প্রফেসর ড. মো. নাছিম আখতার
১৭. ড. ফজলে এলাহী মোহাম্মদ ফয়সাল
১৮. ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী
১৯. অভিজিৎ সেনগুপ্ত
২০. নাজমুন টুনি
২১. শাহ্ জে. চৌধুরী
২২. দর্পণ কবীর
২৩. কাজী মোতাহার রহমান
২৪. ফাইজুল ইসলাম
২৫. মোস্তফা অভি
২৬. অলি সেন
২৭. মাসুদ অর্ণব
২৮. তোফাজ্জল লিটন
২৯. সুলতানা পারভীন শিমুল
৩০. সানিয়া রুশদী
৩১. নার্গিস বানু জুহী
৩২. হোসেন ইমাম
৩৩. অজিত দাশ
৩৪. মো. নূরুল হুদা
৩৫. নাজমুল ইসলাম
৩৬. আবু সাঈদ রতন
৩৭. আনিসুজ্জামান মুহাম্মদ
৩৮. তামারা ইয়াসমীন তমা
৩৯. নিথুয়া রেংখং
৪০. মনজুরুল ইসলাম
৪১. সফিকুন্নবী সামাদী
৪২. ইকবাল হোসেন রায়হান
৪৩. ওয়াকিল আহমেদ
৪৪. নুসরাত সুলতানা
৪৫. মুবিন খান
কবিতা:
১. ফারুক মাহমুদ
২. ফারজিনা মালেক
৩. রুনুদাশ
৪. সেলিনা খান
৫. রুনা রহমান
৬. তানিয়া ইসলাম
৭. সাবেরা হোসাইন
৮. শাহানাজ পারভীন শিউলি
৯. শাহেদ কায়েস
১০. টিটো মোস্তাফিজ
১১. অরণ্য আনাম
১২. রীনা ঘোষ
১৩. শ্যামল কুমার সরকার
১৪. হাফিজুর রহমান
১৫. হারুন উর রশীদ
মুবিন খান তিন দশক আগে ছাত্রজীবনে সংবাদপত্রে কাজ করতে শুরু করেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক ও পাক্ষিককে তিনি কাজ করেছেন। মাঝে বছর দশক দেশের বাইরে ছিলেন। বিদেশে বসেই নিউ ইয়র্কের বাংলা পত্রিকা রূপসী বাংলায় নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে যুক্ত হন। এখনো সে দায়িত্বটি পালন করছেন।