এক পৃষ্ঠা কবিতা
ফারজিনা মালেক
রসাতল-১
কত কিছু জানতে
পাইতে
ধরতে
ইচ্ছা হয়।
সব ধরি
স্ফটিকের গ্লাস।
লোকাল বাস।
কবিতা উপন্যাসের বই।
ধান, চাল, খই।
কুমোরের মাটির দলার মতো
তোমারে ধরতে পাইতাম যদি,
গড়ে নিতাম এই বেলা।
আর ঐ বেলা শরীরের উত্তাপে
শুকায়ে নিতাম হেলাফেলা।
ব্যাস,
তারপর মন্থন আর মন্থন।
ছু মন্তরে নিভিয়ে দিতাম সমস্ত লণ্ঠন।
বুকের বাসরে লুকিয়ে রাখতাম
আর পিষে পিষে নিতাম সুখ।
সব সংযম ছুইটা যাক
আমার উথাল লাগুক
আমার পাতাল লাগুক।
এক লক্ষ মাইল শ্বাসের দূর থেকে
আমি আগুন হই,
পুড়ায়ে দেই তোমার ঘরদোর,
বিছানা, চাদর, বালিশ আর
আহøাদের ভোর
হাড়ি কাড়ি, কফির মগ।
ফুটন্ত পানি, টগবগ টগবগ।
আমাদের ফিসফাস থামুক
সবকিছুই উত্তালে চাই।
গহনে হৃদয় ঘষে চুমুকে চুমুক
চলো, রসাতলে যাই।
রসাতল-২
কথা ছিল শান্ত শরতে
গেরিলা বসন্ত হবো।
খুব করে বিধ্বংসী হবো।
কোমলাঙ্গী লতা ফুল
পিষে ফেলব দুর্নিবার অস্থিরতায়।
নেমে যাব রসাতলে
পিছনে পড়ে থাকবে তাবৎ দুনিয়াদারী।
তারপর?
তারপর পৃথিবী ঘুরে ঘুরে সূর্যের সব পাশ দেখে নেয়।
ঘাসফুলেরা শান্ত হাওয়ায় দোলে
জাহান্নামের আগুনে ঘি ঢালে নীতিশাস্ত্র।
দুনিয়াদারি মুচকি হেসে, আরও মায়ায় জড়ায়ে নেয়।
জগতকর্মে বশীভূত হই,
মন শরীরে প্রশমিত হই,
মায়ায় ছায়ায় থেকে যাই তবু।
রসাতল-৩
বললামই তো, রসাতলে যাও।
যেন দেখিই না আর এই সংসারে।
যেন পড়ও না আর মনে।
হঠাৎ হঠাৎ কীসব যে হয়!
ঘাসফুল তুলে তাকে বললা, দূরে যেতে।
যেনবা আমিই তুমি,
আর তুমি আসলে ঘাসফুল।
খুব একচোট চোরা হাসি হইলো, তাই তো?
ঠোঁট হাসলো, চোখ হাসলো,
অল্পবিস্তর নাক ঘামলো।
আমি কি বুঝি না এইসব কারসাজি?
না থাকার দিনগুলিতে,
পরিণত দুঃখের চাষ কি করবে না ঘাসফুলেরা?
সে জানে, সবাই জানে
চোরা হাসিতে মরমের ব্যথা লুকাও তুমি।
অথচ,
এ বিষয়ে হাসির কিছু বলার আছে কিনা-
তা তো জানতেও চাই নাই কোনোকালেই ।