৯/১১ অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসের ১১ তারিখটি বিশ্ববাসী কখনও ভুলতে পারবে না। ২০০১ সালের এইদিন সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সন্ত্রাসী সংগঠন আল কায়েদার আত্মঘাতী হামলায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার টুইন টাওয়ার ধ্বংস হয়ে যায়। ২ হাজার ৯৯৭ জন মানুষের প্রাণহানী ঘটে। যার মধ্যে বাংলাদেশি ছিল ছয় জন। আহত হয়েছিল ৬ হাজারের অধিক মানুষ।
মানব ইতিহাসের সন্ত্রাসের ইতিবৃত্তে জঘন্যতম হামলাটি যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত হলেও এর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে গোটা বিশ্বে। দুই দশক আগের সে ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে মানব বিশ্বের প্রতিটি ভূখণ্ড। ৯/১১-র প্রভাব সহসা শেষ হচ্ছে না। এক নিরন্তর ভয় আরও অনেকদিন তাড়িয়ে বেড়াবে সভ্যতাকে।
এ যুগের অন্যতম সেরা চিন্তাবিদ নাসিম নিকোলাস তালেব ৯/১১-কে বলেছেন সভ্যতার ইতিহাসের এক ‘ব্ল্যাক সোয়ান’ ঘটনা। ইন্টারনেট কিংবা পার্সোনাল কম্পিউটারের আবিষ্কার, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার মতোই; প্রবল প্রভাবসম্পন্ন যে ঘটনার ভবিষ্যদ্বাণী করা অত্যন্ত কঠিন, ঘটে যাওয়ার পরে যার কার্যকারণের ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় মাত্র।
টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পরপরই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক যুদ্ধ শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসন। প্রথমেই মার্কিন বাহিনী অভিযানে নামে আফগানিস্তানে। এর দুই বছর পর শুরু হয় ইরাকে অভিযান। আফগানিস্তানে তালেবান ও ইরাকে সাদ্দাম হোসেন সরকারের পতন ঘটে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি। দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আরও ব্যাপক রূপ নেয়। তার প্রভাব পড়ে পুরো বিশ্বে। আমেরিকা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করতে পারলেও আল কায়দার বিস্তার ঠেকাতে পারে নি।
অব্যাহত সামরিক অভিযান সত্ত্বেও আল-কায়েদা পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয় নি। বরং জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে দেশ দেশে।
আল কায়েদার দলছুট সশস্ত্র জঙ্গিরা জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে (ইসলামিক স্টেট) যোগ দেয়। এরপর ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয় জঙ্গি সংগঠনটি। আইএসের এই আকস্মিক উত্থানে বিশ্বব্যাপী জঙ্গি সংগঠনগুলোকে চাঙা করেছে।
আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরেছে তালেবানরা। বিস্ময়করভাবে তালেবানরা এখন আরও শক্তিশালী। দৃশ্যত মার্কিন বাহিনীর ২০ বছরের অভিযানে তারা এতটুকুও দুর্বল হয় নি। সেদিক থেকে ২০ বছরের এই যুদ্ধের ফলাফল লাখো প্রাণহানি, বিপুল অর্থের অপচয়, ধর্মীয় উন্মাদনা ছড়ানো ছাড়া কিছুই নয়।
৯/১১-এর পর বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলেছে। মুম্বাই, লন্ডন, প্যারিস, নিস, ব্রাসেলস, ক্রাইস্টচার্চ বারবার কেঁপে ওঠে সন্ত্রাসের প্রকোপে। ৯/১১ উত্তর দুনিয়াতে অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে লড়াইটা হয়ে পড়েছে আরও কঠিন। তবে প্রত্যাঘাতের চেষ্টাও হয়েছে বারবার। প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ঘোষণা দিয়েছিলেন, পেছনের কুশীলবদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেবে আমেরিকা। এটা করতে গিয়ে আমেরিকা নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছে।
দুই ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করেও দু’দশকের আফগানিস্তান যুদ্ধ কোনওক্রমে শেষ হয়েছে, কিন্তু সন্ত্রাস দমন থেকে গেছে অধরা। যদিও এর মাঝে আমেরিকার বুকে আর কোনও বড়সড় হামলা হয় নি ঠিকই কিন্তু বিশ্বের অন্যত্র সন্ত্রাসবাদ থেমে থাকে নি।
আল জাজিরার এক মন্তব্য প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান কিংবা ইরাকে যে লক্ষ্য নিয়ে মার্কিন অভিযান শুরু হয়েছিল, তা অর্জন হয় নি বললেই চলে। উল্টো লাখো সাধারণ মানুষের প্রাণ গেছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে অনেকে।
৯/১১ হামলার পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ শুরুর পর উল্টো বিশ্বজুড়ে জঙ্গিবাদ যেন ছড়িয়ে পড়ে। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে আইএস, আল কায়েদার পাশাপাশি আল-শাবাবের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান ঘটে।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স ২০২০ সালে ‘কস্ট অব ওয়ার’ বা যুদ্ধের মূল্য শিরোনামে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে সন্ত্রাস বিস্তারের তথ্য। এ তথ্যে জানা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কথিত বৈশ্বিক যুদ্ধ ঘোষণার পর আফগানিস্তান থেকে যে যুদ্ধ শুরু হয়, গত দুই দশকে সেই যুদ্ধ আর সংঘাত ইরাক, পাকিস্তান, ইয়েমেন, লিবিয়া, সিরিয়া, সোমালিয়াসহ অন্তত ২৪টি দেশে ছড়িয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী এই যুদ্ধে প্রায় ৯ লাখ মানুষ মারা গেছেন, আর বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৪ কোটি মানুষ।
বিশ্বে এখন অশান্তি ও অস্থিরতার প্রধান কারণ ক্ষুধা বা দারিদ্র্য নয়, ধর্মের নামে সহিংসতা। ধর্মীয় উন্মাদনার শিকার হয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা- সর্বত্র একই চিত্র। ধর্মের নামে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, নাইজেরিয়ায় বোমা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে এমনকি অভিন্ন ধর্মাবলম্বীদেরও মেরে ফেলা হচ্ছে সম্প্রদায়গত (শিয়া-সুন্নি) বিভেদের কারণে। বহুত্ববাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ভারতে গরুর মাংস খাওয়ার ‘অপরাধে’ কাউকে পিটিয়ে ও পাথর ছুঁড়ে হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে।
মার্কিন গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টারের ধর্ম ও জনজীবন বিষয়ক বার্ষিক জরিপ রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বে ধর্মসংক্রান্ত সামাজিক বৈরিতা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। আর এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে সামাজিক অস্থিরতা। ২০১৪ সালে প্রকাশিত মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক রিপোর্টেও বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘বিশ্বের প্রায় প্রতিটি প্রান্তে লাখ লাখ খ্রিস্টান, মুসলমান, হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে নিজেদের বাসস্থান ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।’
যেসব দেশে উদ্বেগজনক হারে ধর্মীয় বৈষম্য বাড়ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যও রয়েছে তাদের মধ্যে। প্রতিবেদনে ইউরোপ ও এশিয়ায় মুসলিমবিরোধী এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে ইহুদিবিরোধী মনোভাব বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে ধর্মীয় সম্প্রদায়গত সহিংসতা, মিয়ানমারে মুসলিমবিরোধী সহিংসতা এবং উত্তর কোরিয়া, সৌদি আরব, ইরান ও সুদানে সরকার আরোপিত ধর্মীয় বিধিনিষেধের কথা।
দুটি জরিপেই ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে সরকারি ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে দায়ী করা হয়েছে। সুকৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ধর্মের ব্যবহারের বিষয়টি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশে ধর্মভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনের জন্ম ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে, তা দিবালোকের মতোই সত্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সোভিয়েত ইউনিয়নের স্নায়ুযুদ্ধের যুগে আফগানিস্তানে সোভিয়েত সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য জন্ম দেয়া হয় তালেবান ও আল কায়েদার।
১৯৯০ সালের আগে বিশ্বের কোথাও বর্তমানের মতো ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব ছিল না। আফগানিস্তানে তালেবানের জঙ্গিত্ব তখনও প্রকাশ পায় নি। বাংলাদেশেও হুজি, জেএমবি ইত্যাদি সংগঠনের অস্তিত্বের কথা জানা যায় নি। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে ভারতে বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক দলের কোনো জনসমর্থন ছিল না। অনেকে মনে করেন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর সমাজতন্ত্রের অবসানে শূন্যস্থানটি পূরণ করে নিয়েছে ধর্মাশ্রয়ী দলগুলো। বেড়েছে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা। ৯/১১-এর পর এটা ব্যাপকতা পেয়েছে।
৯/১১-এর প্রত্যক্ষ কুপ্রভাব থেকে বাংলাদেশও মুক্ত থাকতে পারে নি। হলিআর্টিজানের হামলার ঘটনা যে ওই ঘটনার প্রত্যক্ষ প্রভাব তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
সাম্প্রতিক নানা ঘটনাপ্রবাহের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশেও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
হেফাজতে ইসলাম নাম দিয়ে কট্টর ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছে। তারা ‘নারী নীতি’ বাস্তবায়ন করতে দেয় নি। ব্লগার এবং ভিন্ন চিন্তার মানুষও তাদের বর্জন ও হত্যার হুমকির শিকার হয়েছেন৷ কেউ কেউ পেয়েছে ‘নাস্তিক’ উপাধি৷ হত্যার শিকার হয়েছেন লেখক প্রকাশক। এদের চাপে পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘ইসলাম বিরোধী’ লেখা বাদ দিয়েছে সরকার।
অবলীলায় ঘটে যাচ্ছে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনা। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ‘কোরআন অবমাননা করে ফেসবুকে ছবি পোস্ট’ করার অভিযোগ তুলে কক্সবাজারে রামুর ১২টি বৌদ্ধমন্দিরে আগুন দেওয়া হয়৷ ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ‘রসরাজ দাস নামে এক যুবক ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করেছে’ এমন অভিযোগ তুলে তাকে পিটিয়ে পুলিশে দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়। ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটে শহিদুন্নবী জুয়েল নামের একজনকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে ফ্রান্সে ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ঢাকায় সমাবেশে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে হত্যার হুমকি দিয়ে প্ল্যাকার্ড নিয়েও অংশ নিতে দেখা যায়৷ সর্বশেষ দুর্গাপূজায় উত্তরার একটি মণ্ডপে পূজা বন্ধের আবেদন করা হয়েছিল মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত লাগার কথা বলে৷
দুনিয়াজুড়ে অবিশ্বাস এবং নিরাপত্তাহীনতার আবহ ছড়াতে চায় জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসের একমাত্র ধর্ম হয়ে ওঠে সন্ত্রাস। তারা জানান দিতে চায় নিজেদের অস্তিত্ব, চায় প্রচার আর পরিচিতি। ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের পর ঘটা করে তার দায়ভার স্বীকার করে বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী জঙ্গি গোষ্ঠী। এ ক্ষেত্রে সফলই বলতে হবে ৯/১১-এর কুশিলবদের।
মার্কিন নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণকালে বলেছিলেন, ‘সহিংসতা অনৈতিক, কারণ এটি ভালোবাসার বদলে ঘৃণাকে নির্ভর করে বিকশিত হয়। এটা সমাজকে ধ্বংস করে এবং ভ্রাতৃত্বকে অসম্ভব করে তোলে। এটা বহুমতের সমাজকে রূপান্তর করতে চায় একমতভিত্তিক সমাজে।’
মার্টিন লুথার কিংয়ের এ উক্তির অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেছে। গত ৫০ বছরে বিশ্বে জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে। ঘটেছে সভ্যতার বিকাশ। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সেক্যুলার চিন্তাধারার বিকাশ ঘটছে। কিন্তু আজ এই একুশ শতকের দ্বিতীয় দশক পেরিয়ে এসে আমরা দেখছি, সারা বিশ্বে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও সাম্প্রদায়িকতা।
ধর্মীয় উন্মাদনা বন্ধের জন্য পরমতসহিষ্ণুতার কোনও বিকল্প নেই। অন্যের মতামত ও বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখাতে হবে। ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। ধর্মচর্চাসহ জীবনাচরণের ক্ষেত্রে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সব ধর্মাবলম্বীর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ কোনও ধর্মের প্রতি রাষ্ট্রের পক্ষপাতিত্ব বন্ধ করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। ব্যক্তিজীবন ও পারিবারিক জীবনে পরমতসহিষ্ণুতার চর্চা করতে হবে। ভিন্ন ধর্ম-মতাবলম্বীদের প্রতি সহিষ্ণু হওয়ার শিক্ষা দিতে হবে শিশুকাল খেকেই। মনে রাখতে হবে পৃথিবী নামক গ্রহটিকে ধর্মীয় উন্মাদনা থেকে মুক্ত করতে না পারলে ক্রমেই তা মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে।
লেখক: ঢাকায় কর্মরত সাংবাদিক। চিফ রিপোর্টার, প্রতিদিনের বাংলাদেশ [প্রকাশিতব্য দৈনিক]