ধারাবাহিক: শেষ অংশ
পূর্ব প্রকাশের পর
জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে উজিরপুরের হাত্তারপাড়া পুলিশ ক্যাম্পে ইকবাল হোসেন ফোরকার নেতৃত্বে দশবারো জন মুক্তিযোদ্ধা হামলা চালালে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হয়। সারারাত যুদ্ধ শেষে ক্যাম্প ইনচার্জ দারোগা আব্দুল বারীসহ ক্যাম্পের সব পুলিশ পালিয়ে যায়। এই ক্যাম্প থেকেও বামপন্থীরা বেশ কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। সেই হামলায় করফাকরের ফজলু মাস্টার তথ্যগত সহায়তা করা ছাড়াও সশরীরে অংশগ্রহণ করেন। যদিও চারু মজুমদারের বিপ্লবী আন্দোলনে অংশ নিয়ে বোমার আঘাতে তিনি দুই পা হারিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও সেদিন তিনি বিপুল বিক্রমে যুদ্ধ করেছিলেন। রহমতপুর নারিকেল বাগান এলাকায় একটি শক্তিশালী রাজাকার ক্যাম্প ছিল। পাকিস্তানি সেনারা নিয়মিত এই ক্যাম্পে এসে বিনোদনে লিপ্ত থাকত। শফিউল্লাহ বিহারীর ছেলে রাজাকার খোকন সেই ক্যাম্পের দায়িত্বি ছিল। ২ জুলাই রাত আনুমানিক সাড়ে আটটায় ইকবাল হোসেন ফোরকান ও আবদুল ওহাব খানের যৌথ নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা নারিকেল বাগান রাজাকার ক্যাম্পে সাঁড়াশি আক্রমণ করে। কয়েক ঘন্টাব্যাপী যুদ্ধ শেষে মফেজ ঢালী, গেরিলা লতিফ, সৈয়দ সুলতান ও ইকবাল হোসেন ফোরকানসহ ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা মারা্তকভাবে আহত হন। অন্যদিকে কমান্ডারসহ তিনজন রাজাকার ও একজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়।
নারিকেল বাগান যুদ্ধের কয়েকদিন পরে শহরের হাসপাতাল রোডে ইকবাল হোসেন ফোরকানের পৈতৃক বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে বাড়ির দরজা জানালা পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীরা। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শাহ আলম ও মহিউদ্দিন মধু কর্ণকাঠীতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্যতা থাকায় বিপ্লবী ঘড়নার রাজনৈতিক কর্মী ও মাটিভাংগা কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক আবদুস সাত্তারকে কমান্ডার নিযুক্ত করে ৩০/৩৫ জনের একটি দল গঠন করেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের সেই দলে সেনা সদস্য আব্দুল মান্নান হাওলাদার ফিল্ড কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন ইপিআর ও আনসার সদস্য এই দলে যোগদান করেন। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে নবম সেক্টরের অন্যতম সাব সেক্টর কমান্ডার মাহফুজ আলম বেগের অধীনস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিমল চন্দ্র দাসের মাধ্যমে বেশকিছু থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল ও গোলাবারুদ প্রাপ্ত হয়। বরিশাল মুক্ত থাকাকালীন মেজর জলিলের ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ এই বাহিনীতে যোগ দেয়। তাছাড়া স্থানীয় ভাবে কিছু বন্দুক সংগ্রহ করা হয়।
২৫ মে দিবাগত রাতে আব্দুল মান্নান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মফিজুর রহমান মফিজসহ এই বাহিনীর ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা নলছিটি থানা আক্রমণ করে এবং সকাল পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হয়। সেই যুদ্ধে নলছিটি’র বাড়ৈয়ারা গ্রামের মো. ইউনুস হাওলাদার শহীদ হন এবং আহত অবস্থায় কর্ণকাঠীর আবুয়াল হোসেন হাওলাদার ধরা পড়েন। পরবর্তীতে পাকিস্তানি সেনারা নির্মম নির্যাতন করে কোনো তথ্য আদায় না করতে পেরে তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়াও শহরের হাসপাতাল রোডের রেজায় রহিম ফেরদৌস সেই যুদ্ধে আহত হন।
নারিকেল বাগান যুদ্ধে আহত ইকবাল হোসেন ফোরকান’কে দেখতে ও অস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে জুলাই মাসের প্রথমার্ধে সৈয়দ নজরুল ইসলাম কর্ণকাঠী থেকে বলহরে যান। সেখান থেকে বাহেরচরে লুকানো অস্ত্র সংগ্রহ করতে যাওয়ার পথে মুক্তিযোদ্ধা কৃষ্ণ ও রাজা সহ সৈয়দ নজরুল ইসলাম’কে মুসলিম লীগ কর্মী রব সিকদার কৌশলে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। একটি রিভলবারসহ গ্রেফতারের পরপরই তাদের বরিশাল শহরের পাকিস্তানি সেনাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ওয়াপদা কলোনির পাকিস্তানি ক্যাম্পে অমানুষিক নির্যাতনের পর মুক্তিযোদ্ধা কৃষ্ণকে হত্যা করা হয় এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও রাজাকে যশোর ক্যান্টমেন্টে পাঠিয়ে দেয়া হয়। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর সৈয়দ নজরুল ইসলাম মুক্তি লাভ করে শহরের আলেকান্দার পৈতৃক বাড়িতে ফিরে এলে ২১ অক্টোবর রাজাকার বাহিনীর কমান্ডারকে বাগেরহাটের আব্বাস ধরে নিয়ে যায় এবং ওয়াপদা ক্যাম্পে তাকে নিয়ে গিয়ে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সারা দেহ রক্তাক্ত করে কীর্তনখোলা নদীর তীরে নিয়ে হাত পা বেঁধে গুলি করে নদীতে ফেলে দেয়। পরদিন ভোরবেলা চরআইছা খেয়াঘাট থেকে নৌকার মাঝিরা তাকে উদ্ধার করলে তিনি কেবল নিজের পরিচয় দিতে পেরেছিলেন। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে উদ্ধারের অল্পক্ষণ পরেই তিনি মারা যান।
এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে পূর্ব বাংলা শ্রমিক আন্দোলন নেতা সিরাজ সিকদার ঝালকাঠি আসেন। এখানে সিরাজ সিকদারের অনুগত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জাহাঙ্গীর কবীর, শশাঙ্ক পাল, মুজিবুল হক মেহেদী, শ্যামল রায়, জ্ঞানধীর কর্মকার, আ. সালাম প্রমুখ। এরা মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্রশিক্ষণ শিবির পরিচালনা করতেন। ঝালকাঠি থানার দারোগা মুহাম্মদ সফিকের সহায়তায় সিরাজ সিকদার ও তার কর্মীরা থানার অধিকাংশ অস্ত্রগোলাবারুদ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। এরপরই পাকিস্তানি দালাল আদম আলী ও রুস্তম আলীকে ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে প্রকাশ্যে গুলি করে খতম করে এই বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা। ঝালকাঠির সরকারি গুদাম ভেঙে কয়েকশ’ মন চাল নিয়ে সিরাজ সিকদারের বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা শহরের অদূরে পেয়ারা বাগানে ঘাঁটি স্থাপন করে। বরিশালের ৪টি থানা ঝালকাঠি, বানারীপাড়া, স্বরূপকাঠি ও কাউখালীর ৬২ গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত বিস্তীর্ণ পেয়ারা বাগান জুড়েই এই বাহিনীর অনেকগুলো ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এদের প্রধান ক্যাম্প ছিল ভীমরুলীতে। বিভিন্ন এলাকায় এই বাহিনীর প্রথম সাড়ির সামরিক কমান্ডার ছিলেন ভবরঞ্জন, মনসুর, রণজিত্, জাহাঙ্গীর কবীর, আনিস, শ্যামল রায়, মানিক, নিলু ও শাহজাহান। রাজনৈতিক পরিচালক ছিলেন নুরুল ইসলাম ওরফে পণ্ডিত, সেলিম ওরফে হিরু, আসাদ, ফুকু চৌধুরী, খোরশেদ আলম খসরু, রেজাউল, ফিরোজ কবির, মান্নান, সেলিম শাহনেওয়াজ, মোস্তফা কামাল মন্টু প্রমুখ।
৩০ এপ্রিল থেকে এই অঞ্চলে সিরাজ সিকদার বাহিনী বেশ কয়েকটি সফল অভিযান পরিচালনা করে বহু পাকিস্তানি সেনা, স্বাধীনতা বিরোধী ও রাজাকার খতম করলেও পাকিস্তানি সেনা ও শর্ষিনা পীরের অনুসারী রাজাকার বাহিনীর ধারাবাহিক সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে জুনের মাঝামাঝি সময়ে পর্যায়ক্রমে পেয়ারা বাগান এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সিরাজ সিকদার বাহিনীর পাশাপাশি পেয়ারা বাগান এলাকায় সাব সেক্টর কমান্ডার মাহফুজ আলম বেগের অধীনে মুজিবনগর সরকারের প্রতি অনুগত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। তাদের সাথে কোনোরকমের সংঘাত না হলেও পরবর্তীতে সিরাজ সিকদার বাহিনী জেলার অন্যান্য স্থানে সাব সেক্টর কমান্ডার শাজাহান ওমর ও তার অধীনস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধা মাসুমের নেতৃত্বে সিরাজ সিকদার অনুগত মুক্তিযোদ্ধারা বাকেরগঞ্জ থানা আক্রমণ করেছিলেন। সেই ঘটনার কয়েকদিন পর পাদ্রীশিবপুরে বাকেরগঞ্জ থানার কিয়দংশের বেইজ কমান্ডার আবু জাফরের নেতৃত্বে বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধা মাসুম ও ভাস্করকে হত্যা করা হয়। এছাড়াও মেহেন্দিগঞ্জের শ্রীপুরে সিরাজ সিকদার অনুগত মুক্তিযোদ্ধাদের দমন করেছিলেন স্বয়ং সাব সেক্টর কমান্ডার শাজাহান ওমর।
যদিও সাব সেক্টর কমান্ডারদের অধীনস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের তারা কখনোই প্রথম হামলা করে নি। তবে নিজেদের দলের বাইরের বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের দখল নিতে কখনো কখনো সংঘাতে জড়িয়ে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। জুন মাসে গুঠিয়া সংলগ্ন হক সাহেবের হাট এলাকায় এই ধরনের একটি ঘটনায় নুরুল ইসলাম পণ্ডিতসহ সিরাজ সিকদার অনুগত এগারো জন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধের প্রথমার্ধে পেয়ারা বাগানে তাদের সুদৃঢ় অবস্থান অন্যান্য সকল মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল। এতকিছুর পরও সিরাজ সিকদার অনুগত মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার প্রশ্নে শেষপর্যন্ত আপোষহীন ভূমিকা পালন করেছিল। হাইকমান্ডের নির্দেশনা বা অন্য কোনো কারণে সিরাজ সিকদার বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সাব-সেক্টর কমান্ডার শাজাহান ওমর বৈরী মনোভাব পোষণ করলেও অন্যান্য বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তেমন কোনো সমস্যা ছিল না। অধ্যাপক আবদুস সাত্তারকে তিনি বেইজ কমান্ডার নিয়োগ দেন। অধ্যাপক সাত্তারের নেতৃত্বে বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধারা সাব-সেক্টর কমান্ডার শাজাহান ওমর অধীনে বিভিন্ন অভিযানে অংশ গ্রহণ করেন। এছাড়াও শাজাহান ওমরের ছত্রচ্ছায়ায় বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধারা বরিশাল শহরের বিভিন্ন এলাকায় অতর্কিত গ্রেনেড হামলা চালিয়ে পাকিস্তানি বাহিনী ও স্বাধীনতা বিরোধী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করেছিলেন। এক্ষেত্রে আব্দুল জব্বার, সুলতান আহমেদ খান ও আলমগীর হোসেন সাহসী ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তত্কালীন বরিশাল জেলার অন্তর্গত পিরোজপুরে ভাসানী ন্যাপ ও কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ব বাংলার সমন্বয় কমিটির রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক শক্তি তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। ২৫ মার্চের অব্যবহিত পরেই বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক (ফজলু)-এর নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জনের একটি বাহিনী পিরোজপুর ট্রেজারি থেকে প্রচুরসংখ্যক অস্ত্রগোলাবারুদ ও টাকা পয়সা সংগ্রহ করে। এই অভিযানে ওবায়দুল কবির বাদল, নুরদিদা খালিদ রবি, জামালুল হক মনু, শামসুদ্দোহা মিলন, শহীদুল হক চাঁন, সমীর কুমার প্রমুখ অংশ নেন। পরবর্তীতে এসব অস্ত্রের একটি অংশ বিষ্ণুপুরে সমন্বয় কমিটি নেতা শহীদুল আলম নীরু ও রফিকুল ইসলাম খোকনের কাছে পাঠানো হয়েছিল। এরপর ৫মে ফজলুল হক, পুর্ণেন্দু বাচ্চু, প্রবীর বাচ্চু, জাহাঙ্গীর দেবুকে স্থানীয় দালালদের সহায়তায় গ্রেফতার করে পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পে এনে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর কিছুদিন পর বিধান চন্দ্র মন্টু শহীদ হয়েছিলেন। তারপর কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ব বাংলার সমন্বয় কমিটির পিরোজপুর শাখার নেতা ওবায়দুল কবির বাদল নেতৃত্বে বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের পুরোটা সময় দেশের মাটিতে অবস্থান করে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন।
বরিশালের রণাঙ্গনে একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত নুরুল ইসলাম মনজুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতারা অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করলেও এরপর থেকে বিজয় অর্জন পর্যন্ত তারা ভারতে অবস্থান করেন। দুই-একজন ব্যতিক্রম ছাড়া ২৫ এপ্রিল পরবর্তী সময়ে থেকে বরিশালের তত্কালীন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রায় সবাই আত্মগোপনে ছিলেন, ৮ ডিসেম্বরের পর থেকে তারা জনসম্মুখে আসতে শুরু করেন। সেসময়ে বৃহত্তর বরিশাল জেলার মাঠপর্যায়ে বামপন্থী নেতাকর্মীরা মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেছেন। নভেম্বরে ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা আসার পূর্ব পর্যন্ত বাম ও প্রগতিশীল সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার অরাজনৈতিক ব্যক্তি বিশেষ করে সেনা, ইপিআর ও আনসার সদস্যরা জীবনবাজি রেখে লড়াই চালিয়ে যান। তবে রাজনৈতিক দল নিরপেক্ষ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আজ বরিশালের মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের ভূমিকা ইতিহাস থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। তাদের অবদান রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো স্বীকৃতি পায় নি। বরিশালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখকদের মধ্যেও বামপন্থীদের ভূমিকা অস্বীকার করার সহজাত প্রবৃত্তি লক্ষ্য করা যায়। তাই বরিশালের রণাঙ্গনসহ মুক্তিযুদ্ধের সামগ্রিক বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস লেখার অতিব প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। (শেষ)
লেখক: বীর মুক্তিযোদ্ধা