বাঙালি জাতির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাকে বলা হয় জাতির পিতা। এই জাতির জন্য তিনি একটি দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে অবশেষে বাঙালি জাতির জন্য স্বতন্ত্র একটি দেশের পত্তন করেছেন, বাংলাদেশ যার নাম। এজন্যই জাতির পিতার মর্যাদায় ভূষিত হয়েছেন তিনি। তার আগে এ দেশবাসী, বিশেষ করে ছাত্রসমাজ শ্রদ্ধা, সম্মান ও আদর করে তাকে আরেকটি অভিধায় অভিহিত করে। পাকিস্তানি শাসকরা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে ইতিহাসখ্যাত মিথ্যা মামলায় তাকে অভিযুক্ত করে। কারাগারে আটকে রাখে অনেকদিন। বাঙালি ছাত্র-জনতা সারা দেশে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে কেটে পড়ে। স্লোগান দিতে থাকে- জেলের তালা ভাঙবো, শেখ মুজিবকে আনবো। তালা ভাঙবার উত্তাপ আঁচ করে পাকিস্তানি শাসকরা শেখ মুজিবকে মুক্ত করে দেয়। জেল থেকে বেরিয়ে এলে ছাত্ররা তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দিয়ে বরণ করে নেয়। নাম হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মধুমতি নদী বয়ে গেছে গোপালগঞ্জ জেলার ভেতর দিয়ে। গেছে টুঙ্গিপাড়া গ্রামের ভেতর দিয়েও। এই গ্রামেই শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম। তিন ভাইবোনের একমাত্র ভাই তিনি। বড় দুই বোনের পর বাবা মায়ের বড় আশা একটি পুত্র সন্তানের। শেখ মুজিব জন্ম নিলে তাদের সাধ পূরণ হয়। বড় আদরের সন্তান। নাম দিলেন খোকা। ডাক নাম। বাবা শেখ লুত্ফর রহমান। আর মার নাম সাহারা খাতুন। ছোট বেলা থেকে শেখ মুজিব ছিলেন কোমল স্বভাবের। গরিব-দুখী মানুষের কষ্ট দেখলে তিনি সাহায্য করতে এগিয়ে যেতেন। খাবার বিলিয়ে দিতেন। অকাতরে বিলানো দেখে একদিন তার মা বললেন, খোকা তুমি যে সব ওদের দান করে দিচ্ছ, আমরা খাবো কি? খোকা জবাব দেয়, আমরা তো খাচ্ছিই, ওরা তো খাবার খেতে পায় না।
শৈশবকাল থেকে মানুষের প্রতি তার মমত্ববোধ লক্ষ্য করা গেছে। এরকম দু একটি ঘটনা বলা যায় এখানে। একদিন মুজিব দেখেন শীতকালে এক বুড়ো মানুষ শীতে ঠকঠক করে কাঁপছে। তিনি তার কষ্ট উপলব্ধি করে নিজের গায়ের চাদর বুড়োর গায়ে জড়িয়ে দেন। আরেক দিন তার স্কুলের এক গরিব বন্ধু বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ভিজে বাড়ি ফিরছে। বন্ধুটির বাড়ি কিছু দূরে বলে সারা পথই তাকে ভিজে যেতে হবে। মুজিব বন্ধুর কষ্টে ব্যথিত হলেন ও ছাতাটি তাকে দিয়ে দিলেন। এজন্য বাড়ি ফিরে তাকে বকুনি খেতে হয়েছিল। শেখ মুজিবদের পরিবার খুব স্বচ্ছল ছিল না। অভাব অনটনের ভেতর দিয়ে তাদের চলতে হতো। ছোটকাল থেকে মুজিব যেমন ছিলেন চঞ্চল তেমনি দুরন্ত। তার মতন দুরন্ত ছেলে আরও ছিল। কিন্তু মুজিব ছিলেন দুরান্তপনায় সেরা। সবাই সেজন্য ভয় করত আবার ভালোও বাসত। তাদের নেতা ছিলেন মুজিব। মুজিব না হলে খেলা জমে ওঠে না। আর দলও সরগরম হয় না।
চঞ্চলতার জন্য মুজিবের লেখাপড়া শুরু হয় কিছুটা দেরিতে। সাত বছর বয়সে স্কুলে যেতে শুরু করলেন। ভর্তি হলেন গিমাডঙ্গো প্রাইমারি স্কুলে। তৃতীয় শ্রেণীতে ওঠার পর স্কুল বদল হলো। এরপর গেলেন স্থানীয় মিশনারি স্কুলে। চোখের একটি জটিল রোগের নাম বেরিবেরি রোগ। সেই রোগে আক্রান্ত হলেন মুজিব। একটি চোখে অপারেশন করতে হলো। এর ফলে চার বছরের জন্য লেখাপড়া বন্ধ থাকে। আঠারো বছর বয়সে ১৯৩৭ সালে আবার মিশন স্কুলে ভর্তি হন। এই স্কুল থেকেই ১৯৪২ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। স্কুলে যখন অস্টম শ্রেণীতে পড়ছিলেন, তখন স্কুল পরিদর্শনে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। শেরে বাংলা একে ফজলুল হক তখন অভিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা সভায় পুষপমাল্য দেয়া হলো। প্রধান শিক্ষক মানপত্র পাঠ করলেন। অনেকে বক্তৃতা করলেন। সবই হলো। কিন্তু কেউই ছাত্রদের অভাব-অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী বরাবর তুলে ধরলেন না। সাহস করে কেউ দাবি- দাওয়ার কথা জানাতে পারল না। হালকা পাতলা ও লম্বাটে গড়নের শেখ মুজিব সাহস করে এগিয়ে গেলেন। জেদ করে বললেন, আমাদের অসুবিধার কথা আমিই বলব। পুলিশের বেষ্টনী ভেদ করে ভিড় ঠেলে শেরে বাংলার নিকটে গিয়ে পৌঁছলেন। পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বললেন, আমাদের দাবি পূরণ না করে আপনি কিছুতেই যেতে পারবেন না। শেরে বাংলা মুজিবের সাহস ও প্রত্যয় দেখে চমত্কৃত হলেন। অবিলম্বে তিনি দাবি মেটানোর আশ্বাস দিলেন। ছেলে বেলা থেকেই মুজিব ছিলেন এরকম এক রোখা স্বভাবের। সাহস এবং জেদ তার ব্যক্তিত্বের মধ্যে বিকাশ লাভ করতে থাকে বালক বয়স থেকে।
মুসলমান ছাত্রদের একমাত্র সংগঠন নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশন। এতে তিনি যোগ দেন ১৯৪০ সালে। এক বছরের জন্য ফেডারেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ম্যাট্রিক পাশ করেন ১৯৪২ সালে। এরপর কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসে। একই বছর তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৪৬ সালে কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। বি এ পাশ করেন ১৯৪৭ সালে। একই সালে ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামে আলাদা দুটি রাষ্ট্র গঠিত হয়। ঠিক এ সময়ই হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে দাঙ্গা শুরু হয় কলকাতায়। আগুন, সংঘর্ষ ও মানুষের মৃতদেহের স্তুপ চারদিকে। এই পরিস্থিতিতে শান্তিবাদী মানুষেরা দাঙ্গাবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এর সঙ্গে জড়িত হন শেখ মুজিব। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যান্যর সঙ্গে তিনি দাঙ্গা ঠেকানোর জন্য কাজ করেন। এরপর ঢাকায় চলে আসেন। পরের বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। সে বছরই ৪ জানুয়ারি মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান নামক নতুন দেশ প্রতিষ্ঠিত হলে এর অংশ হয় দুটি। একটি পূর্ব পাকিস্তান ও অন্যটি পশ্চিম পাকিস্তান। সবাই আশা করেছিলেন এবার বুঝি আর শাসন-শোষণ থাকবে না। জুলুম-নির্যাতন থাকবে না। কিন্তু না, পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তান অর্থাত্ বাংলাদেশের মানুষের ওপর প্রভুত্ব কায়েম করতে চাইল। সকল ব্যাপারে পূর্ব বাংলাকে দাবিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র আঁঁটতে লাগল। তারা প্রথম আঘাত হানলো ভাষা ও সংস্কৃতর ওপর। পাকিস্তানের দুই অংশেরই রাষ্ট্রভাষা উর্দু বলে তারা ঘোষণা করল। বাঙালি জাতি এই হীন চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালো। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে তারা গর্জে উঠল। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ দেশব্যাপী ধর্মঘট পালিত হলো। শেখ মুজিবসহ সে সময়ের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের চেষ্টায় বাংলা ভাষার পক্ষে জোরদার আন্দোলন দানা বেঁধে উঠল। গ্রেফতার করা হলো শেখ মুজিব এবং আরো অনেককে। ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ধর্মঘট পালন করতে থাকেন। গরিব কর্মচারীদের আন্দোলনের সঙ্গে শেখ মুজিব জড়িত হয়ে যান ওতোপ্রোতভাবে। এজন্য তাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অযৌক্তিকভাবে জরিমানা ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করেন। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই বছরের ২৩ জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়। শেখ মুজিব তখন জেলে। সে অবস্থায়ই তিনি দলের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। জুলাই মাসে ছাড়া পাবার পর ভুখা মিছিলে নেতৃত্ব দেবার অভিযোগে আবারও তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর আসে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। একুশে ফেবু্রয়ারি ভাষা আন্দোলন চলাকালে মুজিব ছিলেন কারাগারে। একুশের দিনে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে মুজিব জেলখানায় একটানা ১৩ দিন অনশন পালন করেন। ১৯৫৫ সালের ৫ জুন পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শেখ মুজিব গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৭ জুন পল্টন ময়দানের জনসভায় পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন দাবি করে ২১ দফা ঘোষণা করা হয়। গণপরিষদের (জাতীয় সংসদ) অধিবেশন চলাকালে শেখ মুজিব পরিষদের স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা বহুবার দাবি জানিয়ে আসছি, আপনারা এটাকে (পূর্ব পাকিস্তান) বাংলা নামে ডাকেন। বাংলা শব্দটির একটি নিজস্ব ইতিহাস আছে, আছে এর একটা ঐতিহ্য।’
পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসলাম ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের কৌশল প্রয়োগ করতে থাকে। শাসকের অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করলেই বলত- ইসলাম গেল, ইসলাম গেল। এজন্য আওয়ামী লীগকে সর্বজনীন দল হিসেবে পরিচিত করার জন্য মওলানা ভাসানীর প্রস্তাবে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। ১৯৫৫ সালের ২১ অক্টোবর দলের কাউন্সিল অধিবেশনে এ প্রস্তাব পাশ হয়। শেখ মুজিব দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করেন মেজর জেনারেল আইউব খান। নিষিদ্ধ করা হয় রাজনীতি। মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবসহ অসংখ্য রাজনৈতিক নেতাকে আটক করা হয়। ১৯৬১ সালের ডিসেম্বরে ছাড়া পান। জননিরাপত্তা আইনে পরের বছর ২ জুন আবারো গ্রেফতার করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে ১৯৬৫ সালে পুনরায় গ্রেফতার হন। বাঙালির মুক্তিসনদ বলে পরিচিত ঐতিহাসিক ৬ দফা তৈরি হয়। পাকিস্তানের বিরোধী দলসমূহের জাতীয় সম্মেলনে শেখ মুজিব ৬ দফা পেশ করেন। এ বছরই তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ৮ মে আবার তিনি গ্রেফতার হন। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা সাজানো হয়। এর এক নম্বর আসামী করে তাকে ঢাকা সেনানিবাসে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবকে সামরিক সরকার মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পরদিন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে রমনা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ১০ লাখ লোকের সমাবেশ হয়। সমাবেশে ছাত্র সমাজ তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করে। নামের সঙ্গে যুক্ত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বেসামাল রাজনৈতিক অবস্থা দেখে জেনারেল ইয়াহিয়া খান সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখল করেন। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় নির্বাচন। দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭ আসনে এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৩১০টি আসনের মধ্যে ৩০৫টি আসনে শেখ মুজিবের দল আওয়ামী লীগ জয়যুক্ত হয়। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকরা ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা হস্তান্তর স্থগিত করে। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ এর প্রতিবাদে হরতাল হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ রেসকোর্সের বিশাল জনসভায় ঘোষণা করেন, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করেই ছাড়বো ইনশাল্লাহ।‘ এরপর থেকে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। হঠাত্ করে ২৫ মার্চ রাতে নিরস¿ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আক্রমণ শুরু করে। রাত ১টায় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতার বরণের পূর্বক্ষণে তিনি এক বার্তা দিয়ে যান। তাতে বলেন, ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগণ তোমরা যে যেখানেই আছ এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমি তোমাদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।‘ এই ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য এই আমরা ওদিন স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করি। বার্তাটি চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বারবার প্রচারিত হয়।
এরপর শুরু হয় এক রক্তক্ষয়ী লড়াই। আমরা যাকে বলি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সেটা চলে টানা নয় মাস। ৩০ লাখ নিরীহ নিরস¿ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। স্বাধীন বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রায় সারাটি জীবন ব্যয় করে গেছেন। অত্যাচার নির্যাতন সয়েছেন, কারাভোগ করেছেন। জেল খেটেছেন ১১টি বছর। কিন্তু কখনো শাসক ও অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করেন নি। বাঙালি জাতি অবিসম্বাদিত এই নেতাকে জাতির পিতার মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে। এ দেশ, এই জাতি যতদিন পৃথিবীর মানচিত্রে অটুট থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও অমর হয়ে থাকবেন।
লেখক: লেখক ও গবেষক
লেখক, গবেষক ও সংবাদকর্মী আইয়ুব হোসেনের জন্ম নওগাঁয়। তরুণবয়সে প্রগতিশীল ধারার রাজনীতর সঙ্গ যুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধে ৭ নম্বর সেক্টরে অন্তর্ভুক্ত থেকে একজন সাহসী কিশোর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। সক্রিয় ও সার্বক্ষণিকভাবে রাজনীতিতে তৎপর থাকার কারণে একাধিকবার কারাগারে অন্তরীণ থেকেছেন। পরে দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেও সাম্য সমাজের স্বপ্ন থেকে বিচ্যুত হননি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর পেশা হিসেবে সংবাদপত্র, বেসরকারি উন্নয়ন ও গবেষণার সংস্থা এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমীতে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে সংবাদকর্মী হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি লেখালেখি ও সামাজিক গবেষণায়ও নিবিষ্ট।