ঢাকা ইজ ভিয়ারিং টুয়ার্ড পাকিস্তান
উইলিয়াম বর্ডারস-এর বিশেষ নিবন্ধ
অনুবাদ: জাহান আরা
প্রকাশকাল: ১৭ আগস্ট, ১৯৭৫
কলকাতা, ভারত, আগস্ট ১৬: ঢাকার নতুন সরকার বাংলাদেশকে ভারতের রাজনৈতিক কক্ষপথ থেকে সরিয়ে নিতে আজ নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
সামরিক অভ্যুত্থানে শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতাচ্যুত এবং খুন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ক্যু’র ঠিক একদিন পরে, বাংলাদেশ রেডিও থেকে ‘বিশ্বের ইসলামি রাষ্ট্রসমূহ’র সাধারণ উদ্দেশ্যর প্রতি জোর দেওয়া হয় এবং নতুন সরকারকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম রাষ্ট্র, পাকিস্তানের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন বলে উল্লেখ করা হয়।
সেখানে ‘উপমহাদেশের মধ্যকার সমপর্ককে স্বাভাবিক করণের’ প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পূর্ব পাকিস্তানের বাংলাদেশ হয়ে ওঠার পর থেকেই, দেশটি রাজনৈতিকভাবে ভারত দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আসছিল।
এদিকে ক্যু বিষয়ে ভারত সরকার তার প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ঘোষণা করেছে যে, ‘প্রতিবেশী দেশের এমন রাজনৈতিক পরিণতিতে প্রভাবিত না হয়ে পারা যায় না।’
নতুন দিল্লিতে সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘ভারত সরকার বাংলাদেশের সামপ্রতিক ঘটনাগুলোর প্রতিবেদনে ভালোভাবে লক্ষ্য রাখছে এবং পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করছে। শেখ মুজিবুর রহমানের করুণ মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। আমাদের সময়কার একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব হিসাবে আমরা তাকে সম্মানের উচ্চ আসনে বসিয়েছিলাম।’
উভয় পক্ষের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান হওয়ায়, শেখ মুজিব এবং ভারতের মধ্যকার ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৯৭১ সালে বাঙালি মুসলমানদের স্বাধীনতা অর্জনে, পাকিস্তানের সামরিক পরাজয়ে, তিনি (শেখ মুজিব) ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন।
এ মুহূর্তে ভারতকে দূরে সরিয়ে রেখে, পাকিস্তানিদের প্রতি বাংলাদেশের যে কোনো ধরনের পদক্ষেপই এখন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের জন্য উদ্বেগজনক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, বিশেষত ভারতে তার এখনকার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সঙ্কটের মাঝামাঝি অবস্থায়।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি জুলফিকার আলী ভুট্টো তার সরকারের তাত্ক্ষণিক কূটনৈতিক পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়ে, বাংলাদেশকে নতুন উপাধি, ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ’ বলে উল্লেখ করেছেন। যেখানে, শেখ মুজিবের দেয়া নামটি ছিল, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’।
এবং বাংলাদেশ রেডিও, গর্বের সঙ্গে এই কূটনৈতিক উন্নয়নের ঘোষণা দিয়েছে, সঙ্গে বিবৃতি দিয়েছে যে, পাকিস্তান, ‘ইসলামিক এবং তৃতীয় বিশ্বের’ দেশগুলোকে এই স্বীকৃতিতে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে।
শেখ মুজিবের মন্ত্রীসভার বাণিজ্যমন্ত্রী, বর্তমান রাষ্ট্রপতি, খন্দকার মোশতাক আহমেদের সরকারের দ্বিতীয় দিনে, বাংলাদেশ সারা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে, দেশটির সীমানা বন্ধ, এবং দেশের আন্তর্জাতিক যোগাযোগের বেশিরভাগ লাইন স্থগিত অবস্থায় রয়েছে।
কিন্তু, সরকারি রেডিও এবং অন্যান্য মাধ্যম থেকে ফিল্টার করা রিপোর্ট অনুসারে, উইসকনসিনের সমান আয়তনের, সাড়ে সাত কোটি মানুষের একটি দরিদ্র বদ্বীপ দেশ, বাংলাদেশের সর্বস্তরে শান্তি বিরাজমান রয়েছে।
রাস্তায় সৈন্যদের টহল
ঢাকার রাস্তায় সৈন্যদের টহল চলছে এবং প্রমাণ হিসাবে কিছু ট্যাঙ্ক রয়ে গেছে বলে জানা গেছে। কিন্তু, আগের দিনে বিক্ষিপ্তভাবে যেগুলোর আওয়াজ শোনা গিয়েছিল, সেগুলো এখন থেমে গেছে।
রেডিও জানিয়েছে, ভোররাতে ক্যু’র সময়ে জারি করা ২৪ ঘণ্টার কারফিউ, মানুষের জরুরি কেনাকাটার সুবিধার্থে, আজ সকালে কয়েক ঘন্টার জন্য প্রত্যাহার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে পুনরায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
ঢাকা থেকে পাওয়া আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, কারফিউ বিরতির সময় রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী এবং খালি পায়ে ভিক্ষে করতে থাকা শিশুসহ স্বাভাবিক ভিড় ছিল।
সরকারি রেডিও আরও জানিয়েছে, আজ সকালে রাষ্ট্রপতি আহমেদ তার নতুন মন্ত্রিসভার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন এবং সাধারণ পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে একে সন্তোষজনক বলে মনে করেছেন।
সীমান্তের ভারতীয় প্রান্তে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকা ‘বেশ স্বাভাবিক এবং শান্ত’।
একটি প্রধান জাতি বাঙালি, এখানে ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত। বাংলাদেশ, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে।
ঢাকা রেডিওর তথ্য অনুসারে, পাকিস্তান বাংলাদেশকে ৫০ হাজার টন শস্য এবং ১৫০ লক্ষ গজ কাপড়ের প্রস্তাব দিয়েছে। রেডিওতে নতুন সরকারে নিয়োগের ঘোষণার সময়ে, সামরিক সঙ্গীত এবং প্রেসিডেন্ট আহমেদকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া বিভিন্ন বক্তৃতার মধ্যে, শ্রোতারা লক্ষ্য করেছেন যে, অধিকাংশ মানুষের কাছেই তিনি ভারতীয়পন্থী বলে বিবেচিত হতেন না।
ভারত বিরোধী সংখ্যাগরিষ্ঠতা
ভালোভাবে অবহিত একজন পর্যবেক্ষক বলেছেন, ‘মনে রাখবেন, বাংলাদেশের শতকরা নব্বইজন লোকের মধ্যে আশিজনই ভারতবিরোধী। ভারতীয়দের সঙ্গে মুজিবের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে তাদের ভেতরে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল।’
এই উৎস অনুসারে, নতুন রাষ্ট্রপতি একজন ধার্মিক ব্যক্তি, তার কঠোরতা এবং সততা সুপরিচিত এবং তার দ্বারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব বলে বিবেচিত হয়। যেটা, নতুন সরকারের ভাষ্য মতে, শেখ মুজিবের অধীনে হওয়া ব্যাপকহারে দুর্নীতি।
সরকারি রেডিও বলেছে যে, শেখ মুজিবের মরদেহ ঢাকা থেকে ষাট মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে, তার গ্রামের বাড়ি টুঙ্গিপাড়ায় ‘সম্পূর্ণ সম্মানের সঙ্গে’ দাফন করা হয়েছে।
স্বাধীনতা সংগ্রামের পঞ্চান্ন বছর বয়সি নেতা শেখ মুজিব ছিলেন বাঙালিদের কল্পপুরুষ, কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরে, দুর্নীতি এবং অযোগ্যতার অভিযোগে তার নেতৃত্বকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরেই, বাংলাদেশ নিজের অবস্থান থেকে সরে গেছে, নতুন সরকার যাকে অপশাসন হিসেবে দেখছে কেবলমাত্র এই একটা কারণেই নয়, বরং অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে ব্যাহত করা ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণেও এটা হয়েছে এবং বিশালাকার বদ্বীপ রাষ্ট্রে গঙ্গা এবং ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে তৈরি হওয়া ঘন ঘন বন্যার কারণেও এটা হয়েছে।
গত গ্রীষ্মে বাৎসরিক বন্যায় দেশের অর্ধেকের বেশি সমভূমি প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল, সমস্ত ফসলি জমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং পাঁচ লক্ষ ঘরবাড়ি বন্যায় ভেসে গিয়েছিল, শেখ মুজিব ঘোষণা করেছিলেন: ‘স্বাধীনতার পর থেকে এই বত্রিশ মাসে বাংলাদেশের যতটুকু অগ্রগতি হয়েছিল, সব বন্যায় ভেসে গিয়েছে।’
‘বাংলাদেশ ক্যু: আ ডে অব কিলিংস’
প্রকাশকাল: ২২ আগস্ট ১৯৭৫
ঢাকা, বাংলাদেশ, ২২ আগস্ট: আজ এক নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে, ক্যু’র নেতৃত্বে থাকা তরুণ সেনা অফিসাররা প্রথমে শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের ২০ জন সদস্য এবং রাজনৈতিক সহযোগীদের হত্যা করে। পরবর্তীতে তারা তাদের নতুন নেতাকে সঙ্গে নিয়ে শোডাউন করতে গিয়ে হেরে যায় এবং ব্যারাকে ফিরে যায়।
[ দেশের প্রায় ৮ কোটি মানুষ যখন প্রতি মুহূর্তে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের খাওয়া পরার নিশ্চয়তা বিধান করতে, দেশটির স্থিতিশীল হতে চাওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন বাংলাদেশের নতুন পররাষ্ট্র মন্ত্রী। এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। ]
নির্ভরযোগ্য একটি বাংলাদেশি এবং পররাষ্ট্রীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, ১৫ আগস্ট ভোর রাতের দিকে ক্যু’র সূচনা হয়। ট্রাক বোঝাই সেনা সদস্যরা শেখ মুজিবের ভাগ্নে এবং দ্য বাংলাদেশ টাইমসের সম্পাদক শেখ মনির বাড়িতে গুলিবর্ষণ শুরু করে। শেখ মনি ও তাঁর স্ত্রীকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়।
প্রায় একই সময়ে, এক মাইল দূরের ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায়, শেখ মুজিবের বাড়িতে আক্রমণ করে সেনাবাহিনীর অফিসাররা। গুলির তাণ্ডব চালায়। আর্টিলারি ব্যবহার করে। আর্টিলারির একটি লক্ষ্য ভুল করা শেল প্রায় এক ডজন মানুষকে হত্যা করেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
শেখ মুজিবের সাথে তার স্ত্রী, দুই ছেলে কামাল এবং জামাল, তাদের দুই নববধূ এবং রাষ্ট্রপতির বারো বছরের ছেলে রাসেল, দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের নামে যার নাম রাখা হয়েছিল, সবাইকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়।
আরো হত্যা করা হয়, শেখ মুজিবের ভাই, খুলনার শেখ নাসের এবং ব্রিগেডিয়ার শওকত জামিল চৌধুরী, যাকে সম্প্রতি শেখ মুজিবের সামরিক সচিব পদ থেকে সরিয়ে সামরিক গোয়েন্দা পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
সূত্র জানায়, শেখ মুজিবের বাড়িতে কমপক্ষে ১৬ জনকে হত্যা করা হয়।
একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা যদি শেখকে হত্যা না করত, তাহলে বারো ঘন্টার মধ্যে এই অভ্যুত্থান শেষ হয়ে যেত।’
ভগ্নিপতিকে হত্যা
সেনা সদস্যরা তৃতীয় যে বাড়িটিতে যায় সেটি শেখ মুজিবের ভগ্নিপতি, বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী, আবদুল (আব্দুর) রব সেরনিয়াবাতের বাড়ি। তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে তাঁর স্ত্রী এবং দু সন্তান নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এই ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের চার ঘন্টা পরে অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা তরুণ অফিসাররা শেখ মুজিবের বাণিজ্যমন্ত্রী মোশতাক আহমেদের কাছে যায় এবং তাকে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য প্রস্তাব দেয়। বাংলাদেশি সূত্রটি জানিয়েছে যে, অন্যান্য যে সব মন্ত্রীদের নতুন সরকারের চাকরির জন্য বাংলা (বঙ্গ) ভবনে নিয়ে আসা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশই মুজিব সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন।
এক সূত্র অনুসারে, হিন্দু মন্ত্রী ফণী মজুমদার তার বাড়িতে সেনা সদস্যদের দেখে ভয়ার্ত কণ্ঠে চিৎকার করে ওঠেন, ‘আমাকে মারবেন না, আমি একজন অসুস্থ মানুষ।’ সেনা সদস্যরা মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছিল যে, তারা তাকে মন্ত্রিসভায় যোগদানের জন্য বাংলা (বঙ্গ) ভবনে নিয়ে যেতে এসেছে।
সরকারি সূত্রটি জানায় যে, অবশেষে যখন মোশতাক আহমেদের বেসামরিক সরকার, শেখ মুজিব সরকারের আমলের দুর্নীতি মোকাবেলায় প্রস্তুত হলো, তখন বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়া ১২ থেকে ২০ জন সেনা কর্মকর্তা পিছু হটে যেতে রাজি হলেন।
‘এটা একেবারেই নিঃশর্ত’, তরুণ মেজরদের বিপ্লব থেকে পিছু হটে যাওয়া সম্পর্কে সরকারি সূত্র জানায়, ‘কিন্তু তারা আবার যে কোনো সময়ে ফিরে আসতে পারে।’
মেজররা এখনো মূল যোগাযোগ কেন্দ্রগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে এবং সেনাবাহিনীর রাশিয়ান ট্যাঙ্কগুলো এখনো রাস্তায় রয়েছে।
এই হঠাৎ হত্যাকাণ্ডের পরে নতুন শাসনব্যবস্থাকে সংগঠিত হতে পাঁচদিন লেগে যায়। একটি সামরিক শাসন ব্যবস্থাকে ট্রাইবুনাল স্থাপন এবং অপরাধের সাজা দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয় এবং সরকার জানায় যে তারা এই ক্ষমতা দিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
দ্য বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকা, রাষ্ট্রপতি মোশতাক আহমেদ কর্তৃক শেখ মুজিবের সহযোগী এবং বাংলাদেশ রেড ক্রস প্রধান গাজী গোলাম মুস্তফাকে বরখাস্ত করার বিষয়কে এই নতুন সরকারের প্রথম কৃতিত্ব হিসেবে দেখিয়েছে। গাজী গোলাম মুস্তফার বিরুদ্ধে সাহায্য তহবিল চুরির অভিযোগ আনা হয়েছিল।
সরকারি পত্রিকা জানিয়েছে, নতুন সরকার ‘রাজনৈতিক মতামত, পছন্দ বা সক্রিয়তার কারণে,’ কাউকে হয়রানি করবে না। আরও বলা হয়, ‘এই ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনো গ্রেপ্তার হয় নি।’
সম্পাদকীয়টিতে, অভ্যুত্থানের পর দেশকে গ্রাস করে ফেলা এক নতুন অনুভূতির সঙ্গে লড়াইয়ের প্রচেষ্টা বলে মনে হয়েছে। যে নতুন অনুভূতিটি, একজন বাংলাদেশি নির্বাহীর ভাষায়, ‘আতঙ্কজনক অনুভূতি’।
তিনি বলেন, ‘সবকিছু স্থবির হয়ে গিয়েছিল। যে যাই করতে বলেছে আমরা মুখ বুজে অনুগত হয়ে পালন করেছি। যেন একটা চিরস্থায়ী ভয়ের রাজ্য।’
প্রথম দিনের হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সরকার এখনও স্তব্ধ হয়ে আছে। প্রায় বারো ঘন্টা ধরে শেখ মুজিবের মৃতদেহ তার বাসায় পড়ে ছিল। একজন বাংলাদেশি সংবাদদাতা সে সময়ের স্মৃতিচারণ করে বলেছিল, ‘কারণ, কেউই বুঝে উঠতে পারছিল না যে, তাদের আসলে কী করা উচিত।’
অনুবাদক: সাংবাদিক জাহান আরা